বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের দুই সমন্বয়ক হাসনাত আবদুল্লাহ ও সারজিস আলমের বাসা থেকে বিপুল পরিমাণ অর্থ উদ্ধারের মিথ্যা তথ্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রচার করা হচ্ছে। একটি ভিডিওর মাধ্যমে দাবি করা হয়েছে যে, তাদের বাড়ি থেকে যথাক্রমে ২০০ ও ১০০ কোটি টাকা পাওয়া গেছে।
তথ্য যাচাইকারী প্রতিষ্ঠান রিউমর স্ক্যানার জানিয়েছে, এই তথ্যটি সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন। তাদের অনুসন্ধানে প্রমাণিত হয়েছে, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য মো. তারিকুল ইসলামের বক্তব্যের একটি খণ্ডিত অংশ মিথ্যাভাবে উপস্থাপন করে এই গুজব ছড়ানো হয়েছে।
রিউমর স্ক্যানার জানিয়েছে, ফেসবুকে প্রচারিত ভিডিওতে একটি ভুল বার্তা পরিবেশিত হয়েছে। ভিডিওতে এক ব্যক্তিকে বলতে শোনা যায়, "সারজিস আলমের বাসায় ২০০ কোটি টাকা এবং হাসনাতের বাসায় ১০০ কোটি টাকা পাওয়া গেছে।" তবে পুরো বক্তব্য বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, এটি একটি ষড়যন্ত্রের প্রসঙ্গ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছিল।
প্রাথমিক অনুসন্ধানে রিউমর স্ক্যানার Md Tarikul Islam নামে একটি ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে প্রকাশিত আসল ভিডিওটি খুঁজে পায়। ১৯ অক্টোবর পোস্ট করা ভিডিওটির ৯ মিনিট থেকে ৯ মিনিট ৪২ সেকেন্ড পর্যন্ত অংশে মো. তারিকুল ইসলাম বলেন,
“ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে এ লড়াই শেষ হওয়া পর্যন্ত আমাদের কেউ দাবায়ে রাখতে পারবে না। চতুর্দিকে ষড়যন্ত্র শুরু হয়েছে। সারজিসের বাসায় ২০০ কোটি টাকা, হাসনাতের বাসায় ১০০ কোটি টাকা পাওয়ার গুজব ছড়ানো হচ্ছে। এই অভ্যুত্থানে যারা নেতৃত্ব দিয়েছে, তাদের শক্ত নৈতিক মানদণ্ড না থাকলে তারা কখনোই নেতৃত্ব দিতে পারতো না।”
তারিকুল ইসলামের বক্তব্যে কোথাও এই অর্থ উদ্ধারের কথা উল্লেখ নেই। বরং তিনি স্পষ্টভাবে গুজব এবং ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে সতর্ক থাকার কথা বলেছেন। এর পাশাপাশি, গণমাধ্যম বা কোনো নির্ভরযোগ্য সূত্রে হাসনাত আবদুল্লাহ ও সারজিস আলমের বাড়ি থেকে অর্থ উদ্ধারের কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি।
রিউমর স্ক্যানার ও বিশেষজ্ঞরা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে মিথ্যা তথ্য প্রচারের বিষয়ে জনসাধারণকে সচেতন থাকার আহ্বান জানিয়েছেন। ষড়যন্ত্রমূলক তথ্যের মাধ্যমে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করা হচ্ছে, যা সমাজের জন্য ক্ষতিকর।